Saturday, May 15, 2010

জুমুআর খুতবার সারাংশ (৩০ এপ্রিল- ২০১০)

بسْم الله الرَّحْمَن الرَّحيم

সৈয়দনা হযরত আমীরুল মু’মিনীন খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আইঃ) কর্তৃক লন্ডনের বাইতুল ফুতুহ্‌ মসজিদে ৩০ এপ্রিল, ২০১০এ প্রদত্ত জুমুআর খুতবার সারাংশ উপস্থাপিত হচ্ছে।


তাশাহ্‌হুদ, তাউয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর বলেন, আপনারা জানেন, গত কয়েক সপ্তাহ আমি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সফর করেছি। যদিও এ দিনগুলোতে ওকালতে তবশীর পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ-  অর্থাৎ সিয়েরালিয়নের মতো দেশ সফরের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিল যেখানে আমি এর আগে যাইনি, আর এ উদ্দেশ্যে প্রস্তুতিও চলছিল। সেসব জামাতও চাচ্ছিল আর আমারও ইচ্ছা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারীর দিকে এসব দেশ থেকে বলা হল যে, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এখন সেখানে সফর করার মতো অনুকূল পরিবেশ বা পরিস্থিতি নেই। এজন্য সেই সফর বাতিল করা হয়। আল্লাহ্‌ তা’লার এমনই ইচ্ছা ছিল। কিন্তু এ সফর বাতিল করার পর অন্য কোন দেশে যাবার আমার কোন পরিকল্পনা ছিল না। এরপর জানতে পারলাম, স্পেনে জলসা হবে। তখন হৃদয়ে স্পেন যাবার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হল। ইতালিতে মিশন হাউজ ক্রয় করা হয়েছে, সেখানে যাবারও ইচ্ছে হল।  ইতালি যাবার সিদ্ধান্তের কথা শুনে সুইজারল্যান্ডের জামাত বললো, আপনি তো আমাদের কাছেই এসে পড়ছেন কাজেই আমাদের এখানেও আসুন। বেশ কয়েক বছর সেখানেও যাওয়া হয়নি। যাহোক, কোন প্রকার পরিকল্পনা ছাড়াই এসব প্রোগ্রাম হতে থাকে। কিন্তু আল্লাহ্‌ তা’লা এ সফরে অশেষ কৃপাবারী বর্ষণ করেছেন। এ সফর সেসব জামাতের সদস্যের জন্য যেমন ঈমানী উন্নতির কারণ হয়েছে তেমনি আমার জন্যও।
হুযূর (আ·) বলেন, এই সফরে আমাদের প্রথম যাত্রা বিরতি ছিল ফ্রান্সে। আল্লাহ্‌ তা’লার অপার কৃপায় মরক্কো ও অন্যান্য দ্বীপের বাসিন্দা যারা ইউরোপের দেশগুলোতে বসবাস করছেন তাদের মাঝে জামাতের প্রতি আকর্ষণ উত্তরোত্তর বাড়ছে। আর এসব স্থানে অনেকেই আহমদীয়াত তথা সত্য ইসলাম গ্রহণ করছেন। এছাড়া ফ্রান্সের অধীনস্থ কোন কোন দ্বীপ যেগুলোতে আফ্রিকানরা বসবাস করে এবং একইভাবে আফ্রিকার সেসব ফরাসীভাষী-  যারা এখন ফ্রান্সে বসবাস করছেন তারাও বয়’আত করছে। আল্লাহ্‌ তা’লার কৃপায় এদের সংখ্যাও অনেক। এসব লোক একান্তউৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে জামাতী নিযামের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। এসব নবাগতদের মধ্যে থেকে বেশ কয়েকজন এখন ন্যাশনাল মজলিসে আমেলারও সদস্য।

ফ্রান্সে আমি দু’দিন অবস্থান করি, আর দু’টি দিন চোখের পলকেই পার হয়ে গেল। এরপর স্পেনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম, দু’দিন সফরের পর আমরা স্পেনের পেড্রোয়াবাদে গিয়ে পৌঁছলাম; যেখানে আমাদের ‘মসজিদে বাশারত’ অবস্থিত। দু’দিন পর এখানেই জলসা শুরু হবার কথা ছিল। তাই জামাতের সব সদস্যরা এখানে সমবেত হন। পর্তূগাল এবং মরক্কো থেকেও জামাতের বন্ধুরা এখানে এসেছিলেন। এতোদিন স্পেনের মিশনারী ইনচার্জ-ই পর্তূগাল জামাত দেখাশোনা করছিলেন। আমার যাবার আগে থেকেই পর্তূগালে মুবাল্লেগ প্রেরণের চেষ্টা চলছিল, আল্লাহ্‌র ফযলে তিনি পৌঁছে গেছেন। আল্লাহ্‌ তা’লা এ জামাতকেও কর্মতৎপর করুন। পর্তূগালেও মসজিদের জন্য জমি ক্রয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে, দোয়া করুন যেন, পর্তূগালেও খুব তাড়াতাড়ি মসজিদ নির্মিত হয় আর তা জামাতের উন্নতির কারণ হয়। পর্তূগালেও বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ধর্মের প্রতি ভালবাসা রাখেন। সেখানেও অনেকেই বয়’আত করেছেন। তাদের দেখাশোনা এবং সেখানে তবলীগের জন্য আরো বেশি মসজিদ নির্মাণ করা একান্ত  প্রয়োজন। আশা করি মসজিদ বানানোর পর স্থানীয় লোকদের মাঝেও তবলীগের দ্বার খুলবে। সেখানে নতুন যে মুবাল্লেগ এসেছেন আল্লাহ্‌ তা’লা তাঁকেও ভালভাবে কাজ করার তৌফিক দিন।

২০০৫-এ স্পেন সফরকালে আমি ভেলেন্সিয়াতে জামাতের দ্বিতীয় মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলাম এবং জামাতকে উৎসাহিত করেছিলাম। তারপর প্রায় দেড় বছরের মধ্যেই আল্লাহ্‌ তা’লার কৃপায় জামাত সেখানে পূর্বনির্মিত ঘরসহ একটি প্লট কেনার সৌভাগ্য লাভ করে। এটি এখন মিশন হাউজ এবং সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু সেখানকার কাউন্সিলরদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছিল। এজন্য কাউন্সিলে মাষ্টার প্ল্যান জমা দেবার পরও মসজিদ নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যাচ্ছিল না। এখন সেখানকার অবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন আসছে। আশা করি, ইনশাআল্লাহ্‌ অচিরেই মসজিদ নির্মাণের অনুমতিও পাওয়া যাবে। আল্লাহ্‌ তা’লা কৃপা করবেন, এই আশায় আমি সেখানে মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর রেখে এসেছি। দোয়া করুন আল্লাহ্‌ তা’লা যেন সকল বাধা-বিপত্তি দূর করে দেন। আল্লাহ্‌ তা’লা আমাদেরকে সত্ত্বর সেখানে মসজিদ নির্মাণের তৌফিক দান করুন এবং সেই মসজিদ যেন পরবর্তীতে সেখানে আহমদিয়াত ও সঠিক ইসলামের বাণী পৌঁছানোর কারণ হয়।

পেড্রোয়াবাদে জামাতের কার্যক্রম ও প্রয়োজন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবার কারণে ‘মসজিদে বাশারত’ সংলগ্ন স্থানে লাজনা হল ও একটি গেষ্ট হাউসের ভিত্তি রাখা হয়েছে। স্পেনে আল্লাহ্‌ তা’লার ফযলে ন্যাশনাল আমেলার সাথে যে মিটিং হয়েছে তাতে তবলীগের প্রতি মনোযোগ আকৃষ্ট করা হয়েছে। তারা অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পাদন করার অঙ্গীকার করেছেন এবং বলেন যে, ইনশাআল্লাহ্‌ এ বিষয়ের প্রতি আমরা যত্নবান হবো আর জামাতের মনোযোগ আকৃষ্ট করবো। আল্লাহ্‌ তা’লা তাদেরকে এসব অঙ্গীকার পূর্ণ করার তৌফিক দান করুন।


হুযূর বলেন, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্থানে যখন ইসলামের বিপক্ষে প্রোপাগান্ডা হচ্ছে তখন আমাদের জন্য তবলীগ করার এটাই মোক্ষম সময়, আর একথাই আমি তাদেরকে বলেছি। এখন লোকদের মনোযোগ এদিকে রয়েছে। সাধু প্রকৃতির লোকেরা যখন বিরোধীতার কথা শুনে তখন তারা প্রকৃত বিষয়ও জানতে চায়। আমার বিভিন্ন স্থান সফরের সময় মানুষের মনোযোগ আকৃষ্ট হয়। আহমদীরা পরিচিতিমূলক পুস্তকাদী বিতরণের সুযোগ পায়।

হযরত খলীফাতুল মসীহ্‌ সানী (রা·) ১৯৩৭ সালে মালিক শরীফ সাহবেকে ইসলাম প্রচারের জন্য ‘রোম’ যাবার নির্দেশ দেন। ১৯৪০ সাল  পর্যন্ত তাঁর তবলীগে সেখানে কতক মানুষ আহমদীয়াত গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে মালিক সাহেবকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত শত্রুদের হাতে বন্দী থাকতে হয়। ঐ সময় হযরত খলীফাতুল মসীহ্‌ সানী (রা·) মোকাররম মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলীল সাহেব ও মৌলভী মোহাম্মদ উসমান সাহেবকে ইতালী পাঠান আর মালিক সাহেবকে আমীর নিযুক্ত করা হয়। মালিক শরীফ সাহেব এ দু’জনকে সিসিলি পাঠিয়ে দেন। ইতালীর এ অঞ্চলে প্রায় ২৫০ বছর পর্যন্ত মুসলমানদের রাজত্ব ছিল। এখানে প্রথমে মুবাল্লেগদের বিভিন্ন কষ্ট ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। একবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে দেশ ত্যাগের নোটিশ দেয়া হয় কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ্‌ তা’লা ফযল করেন, আর সরকার তাদের দেশ ত্যাগের নোটিশ প্রত্যাহার করে নেয়। কিছুদিন তারা সেখানে অবস্থানও করেন। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি চরম প্রতিকূল রূপ ধারণের কারণে ইতালীর মিশন বন্ধ হয়ে যায়।

এখন আল্লাহ্‌ তা’লা এখানকার জামাতকে মিশন হাউস ও সেন্টার ক্রয়ের সুযোগ দিয়েছেন। ২০০৮ সালে এটা ক্রয় করা হয়েছে। আর মসজিদ নির্মাণের জন্যও চেষ্টা চলছে। মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরগণ এজন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। আল্লাহ্‌ তা’লা তাদেরকে উত্তম পুরস্ড়্গারে ভূষিত করুন। সেখানে কয়েকটি বয়’আতও হয়েছে। গত চারমাসে যারা বয়’আত করেছিলেন তারা সরাসরি আমার হাতেও  বয়’আত করার সুযোগ লাভ করেন, আলহামদুলিল্লাহ্‌।

ইতালীতে জামাত একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এতে আমাদের সেন্টার ‘বায়তুত্‌ তওহীদ’ এলাকার (সেইন্ট পিয়াট্রে ইন কাজালে) সম্মানিত মেয়র, কাউন্সিলর, পুলিশ অফিসার, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও অন্য আরেকটি শহরের মেয়র এবং তাঁর প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। তারা সবাই জামাত সম্পর্কে খুবই ভাল অভিমত ব্যক্ত করেছেন। জামাতের সেবামূলক কার্যক্রম ও শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের বিষয়টি তারা তুলে ধরেন। আমি পবিত্র কুরআনের আলোকে ইসলামের অনিন্দ সুন্দর শিক্ষা তুলে ধরি। এ যুগের ইমাম অর্থাৎ হযরত মসীহ্‌ মওউদ (আ·) আমাদেরকে যে অনুপম শিক্ষা সম্পর্কে অবহিত করেছেন-  সে বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে-  ইসলামের নাম শুনে ঘৃণার পরিবর্তে এর সুন্দর শিক্ষার প্রতি মনোযোগ দেবার আহ্বান জানাই।

এরপর হুযুর বলেন, ইতালী থেকে সুইজারল্যান্ড যাবার পথে তুরিন  শহরে রক্ষিত সেই কাপড় দেখতে যাই যা ক্রশের ঘটনার পর হযরত ঈসা (আ·)-এর দেহে জড়ানো হয়েছিল, যা পবিত্র কাফন নামে পরিচিত। এই কাপড়ের উপর যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয় তা থেকে প্রমাণিত হয় যে, হযরত ঈসা (আ·) ক্রশে মারা যান নি বরং সেই অভিশপ্ত মৃতুø থেকে রেহাই পেয়ে তিনি পূর্বদিকে হিজরত করেন।

হযরত মসীহ্‌ মওউদ (আ·) এ সম্পর্কে বলেন, ইহুদীদের ষড়যন্ত্রের ফলে রোমানরা হযরত ঈসা (আ·)-কে গ্রেফতার করে ক্রশবিদ্ধ করে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ্‌ তা’লা ইহুদীদের দূর্ভিসন্ধি থেকে হযরত ঈসাকে উদ্ধার করলেন। তাঁর দেহে সামান্য কিছু ক্ষত হয়েছিল এবং এ অত্যাশ্চর্য ঔষধ (মরহমে ঈসা) ব্যবহারের ফলে কয়েকদিনের মধ্যে তিনি সম্পূর্নরূপে সুস্থ হয়ে উঠেন। এমনকি তাঁর দেহের ক্ষতের সুস্পষ্ট চিহ্নগুলো সম্পূর্নভাবে মুছে যায়। ইঞ্জিল থেকেও এটা প্রমাণিত যে, হযরত ঈসা ক্রুশ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এটা আসলে (তাঁর জন্য) পুনর্জীবন লাভের মতো বিষয় ছিল। তিনি তাঁর শিষ্যদের সাথে সাক্ষাত করলেন এবং তাঁর নিরাপদ ও সুস্থ থাকার সংবাদ দিলেন। শিষ্যরা আশ্চার্যান্বিত হয়ে ভাবল, তিনি কীভাবে ক্রুশ থেকে রক্ষা পেতে পারেন-  তারা মনে করল, তাদের সামনে তাঁর প্রেতাত্মা এসেছে। তিনি (আ·) তাদেরকে ক্রুশবিদ্ধ করার কারণে সৃষ্ট ক্ষতগুলো দেখালেন। তখন তাঁর শিষ্যদের বিশ্বাস হল যে, তিনি (আ·) ক্রুশের কবল থেকে উদ্ধার পেয়েছেন।’

হযরত মসীহ্‌ মওউদ (আ·) তাঁর ‘মসীহ হিন্দুস্তান মেঁ’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘এই গ্রন্থটি আমি এ উদ্দেশ্যে লিখছি যেন প্রকৃত ঘটনা এবং নির্ভূল ও প্রমাণিত ঐতিহাসিক সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে এবং অন্যান্য ধর্মের প্রাচীন গ্রন্থ সমূহ থেকে ঐ ভয়ানক ভ্রান্ত বিশ্বাসসমূহ দূর করি যা অধিকাংশ মুসলমান ও খ্রিষ্টান ফির্কাগুলোর মধ্যে হযরত মসীহ্‌ (আ·)-এর ক্রুশ বিদ্ধ হওয়ার আগে ও পরের জীবন সম্বন্ধে বিস্তার লাভ করেছে।’

অতঃপর তিনি (আ·) বলেন, ‘আমি এ পুস্তকে প্রমাণ করব যে, হযরত মসীহ্‌ (আ·) ক্রুশে নিহত হননি আর আকাশেও আরোহণ করেন নি। আর তিনি পরবর্তীতে আকাশ থেকে নেমে আসবেন-এ আশা করাও নিরর্থক। বরং তিনি একশ বিশ বছর বয়সে কাশ্মীরের শ্রীনগরে স্বাভাবিকভাবে মৃতুø বরণ করেছেন এবং শ্রীনগরের খান ইয়ার মহল্লায় তাঁর সমাধি রয়েছে।’

উক্ত গ্রন্থে হযরত মসীহ্‌ মওউদ (আ·) প্রথমে হযরত ঈসা (আ·) যে ক্রুশীয় মৃতুø থেকে নিস্তার লাভ করেছেন তার স্বপক্ষে ইঞ্জিল থেকে প্রমাণ উপস্থাপন। এরপর কুরআন-হাদীসের আলোকে ঐসব দলিল-প্রমাণ পেশ করেছেন যা থেকে হযরত মসীহ্‌ (আ·)-এর ক্রুশীয় মৃতুø থেকে রক্ষা পাওয়া সম্পর্কে জানা যায়। অতঃপর তৃতীয় অধ্যায়ে চিকিৎসা শাস্ত্রের গ্রন্থসমূহের সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন, যা থেকে মরহমে ঈসার ব্যবহার এবং হযরত মসীহ্‌ (আ·)-এর ক্রুশ থেকে উদ্ধারের পর-  এর ব্যবহারে তাঁর (আ·) আরোগ্য লাভের উল্লেখ রয়েছে। এরপর তিনি (আ·) ঐতিহাসিক গ্রন্থাবলী থেকে তাঁর (আ·) নসীবায়ন, আফগানিস্তান ও হিন্দুস্তানের দিকে হিজরত করার সাক্ষ্য-প্রমাণ তুলে ধরেছেন। তিনি (আ·) বলেছেন, যে-ই আমার পুস্তক ‘মসীহ হিন্দুস্তান মেঁ’ পাঠ করবে, সে মুসলমান হোক বা ইহুদী, খৃষ্টান হোক বা আর্য সমাজী; সে একথা বলতে বাধ্য যে, হযরত ঈসার আকাশে উঠে যাবার ধারণা সম্পূর্ণ অবান্তর, মিথ্যা ও কল্পিত রটনামাত্র।

খুতবার শেষপ্রান্তে হুযুর বলেন, লন্ডনে ফিরে আসার পথে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ হয়ে আসি। এখানে একটি নিবেদিতপ্রাণ জামাত আছে যার সত্তর শতাংশ আহমদী অ-পাকিস্তানী। এদের মধ্যে অধিকাংশ আরবী ভাষা-ভাষী। কতক নবদীক্ষিতকে আমার সফরকালে আল্লাহ্‌ তা’লা জানিয়েছেন যে, আমরা এ স্থান অতিক্রম করছি। এরপর তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং এটি তাদের ইমান বৃদ্ধির কারণ হয়। আর আমি যেখানে যাত্রাবিরতি করেছি, তারা সেখানে এসে আমার সাথে সাক্ষাতও করেন।

ফ্রান্সের আমীর সাহেব, যিনি এ সফর আয়োজনের জন্য বিভিন্নস্থানে গিয়েছিলেন, তিনি বলেন, এ সফরে আমরা আশ্চর্যজনকভাবে ত্রিশটি বয়’আতও লাভ করি। আল্ল্লাহ্‌ তা’লা নব দীক্ষিতদের ঈমান ও সৎকাজে অগ্রগামী করুন আর জামাত উত্তরোত্তর উন্নতি লাভ করুক। হযরত মসীহ্‌ মওউদ (আ·)-এর সমর্থনে ও তাঁকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির কল্যাণে আজ আমরা আল্লাহ্‌ তা’লার এ আশিস ও কল্যাণ লাভ করছি। আল্ল্লাহ্‌ তা’লা আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করুন।
(প্রাপ্ত সূত্রঃ কেন্দ্রীয় বাংলা ডেস্ড়্গ, লন্ডন)

No comments:

Post a Comment